সিলভিয়া প্লাথ

সিলভিয়া প্লাথ পুরোটা জীবন মৃত্যুর পথে হেঁটে গেছেন। তাঁর কবিতাও উঠে এসেছে মৃত্যু থেকে। আত্মজীবনীমূলক প্লাথের কবিতা। নিজ জীবনের নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা, কবি টেড হিউজের সাথে ব্যর্থ বিবাহিত জীবন, নিজ বাবা মা-র সাথে অমীমাংসিত সংঘাত সব সব কবিতায় উঠে এসেছে তাঁর।

প্লাথের জন্ম ১৯৩২ সালের সাতাশে অক্টোবর। পড়াশোনা করেছেন স্মিথ কলেজ ও ক্যাম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটির নিউনাম কলেজে। ফুলব্রাইট স্কলারশীপ পেয়েছিলেন সিলভিয়া প্লাথ। ১৯৪৭ সালে ‘দ্য স্কলাস্টিক আর্ট এন্ড রাইটিং এওয়ার্ড’ পান। ১৯৫৫ সালে পান গ্লাসকক পুরস্কার। ১৯৮২ সালে  সংগ্রহীত কবিতার জন্য পান মরণোত্তর পুলিত্‌জার পুরস্কার। প্লাথই প্রথম কবি যিনি মরণোত্তর পুলিত্‌জার পুরস্কার পেয়েছিলেন। সিলভিয়া প্লাথের প্রকাশিত বই-এর মধ্যে আছে সংগ্রহীত
কবিতা, ‘দ্য কলোসাস(১৯৬০)আর একটি উপন্যাস ‘দ্য বেল জার’ (১৯৬৩)।

সিলভিয়া প্লাথের কবিতা তার অনন্যসাধারণ রচনাশৈলীর জন্য বিখ্যাত। সেখানে মিলেমিশে লুকিয়ে আছে হাস্যরস, আছে গাম্ভীর্য। নারী আর পুরুষের মাঝখানের নানা সংঘাত, ভেঙ্গে যাওয়া সংসার, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার বৈষম্য - এই যুগের মতই এইসব প্লাথের কবিতার বিষয়বস্তু হ’য়ে তাঁর স্পষ্টবাদী কবিতার ভাষায় আজকের পাঠকের কাছাকাছি এখনো পৌঁছে যায় অনায়াসেই।

মনে করা হয় বাইপোলার ডিসঅর্ডারের শিকার ছিলেন সিলভিয়া প্লাথ। নিজ ডায়েরীতেও লিখে গেছেন প্লাথ, “আমার জীবন যেন এক আনন্দ উজ্জ্বল ধনাত্মক বৈদ্যুতিক স্রোত আর হতাশায় ডুবে যাওয়া ঋণাত্মক বৈদ্যুতিক স্রোতের মাঝে এক যাদুর কাঠির ছোঁয়ায় দোল খাচ্ছে। কোন এক মুহূর্তে যে স্রোতটি প্রধান, সেই স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমায়।” তবে তাঁর সময়ে তেমন কোন ভালো চিকিত্‌সা ছিল না বাইপোলার ডিসঅর্ডারের । নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে একসময় বেছে নিয়েছেন নিজ হাতেই তিনি মৃত্যুকে। ১৯৬৩ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি তিরিশ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন সিলভিয়া প্লাথ।

মৃত্যুই তাঁর শিল্প । “Dying is an art; I do it exceptionally well.”



মন্তব্যসমূহ



কল্যাণী রমা-র জন্ম ঢাকায়। ছেলেবেলা কেটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ভারতের খড়গপুর আই আই টি থেকে ইলেকট্রনিক্স এ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল কমুনিকেশন ইঞ্জিনীয়ারিং-এ বি টেক করেছেন । এখন আমেরিকার উইস্কনসিনে থাকেন। অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সিনিয়র ইঞ্জিনীয়ার হিসাবে কাজ করছেন ম্যাডিসনে।
প্রকাশিত বই -
আমার ঘরোয়া গল্প;
হাতের পাতায় গল্পগুলো – ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা;
রাত বৃষ্টি বুনোহাঁস – অ্যান সেক্সটন, সিলভিয়া প্লাথ, মেরি অলিভারের কবিতা;
মরণ হ’তে জাগি – হেনরিক ইবসেনের নাটক;
রেশমগুটি;
জলরঙ;
দমবন্ধ।